রেডিও বিনোদন ও যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম । রেডিওতে আমরা খবরের পাশাপাশি বিনোদনের জন্য গান-বাজনা এমনকি পণ্যের বিজ্ঞাপনও শুনতে পারি। সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী তথ্য আদান- প্রদানের জন্য নিজব রেডিও ব্যবহার করে। মোবাইল বা সেলুলার টেলিফোন যোগাযোগেও রেডিও প্রযুক্তি ব্যবহার হয়।
কোনো রেডিও সম্প্রচার স্টেশনের স্টুডিওতে যখন কেউ মাইক্রোফোনে কথা বলে তখন সেই শব্দ বিদ্যুৎ তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়। আমরা 20 Hz থেকে 20,000 Hz কম্পাঙ্ক পর্যন্ত শুনতে পারি। কাজেই শব্দ থেকে বিদ্যুৎ তরলে রূপান্তরিত সিগন্যালটিও এই কম্পাঙ্কের হয়। এটিকে পাঠানোর জন্য উচ্চ কম্পাঙ্কের তরঙ্গের সাথে যুক্ত করা হয়। এই উচ্চ কম্পাঙ্কের তরঙ্গকে বাহক তরঙ্গ বলে। বাহক তরঙ্গের সাথে সিগন্যালকে যুক্ত করার এই প্রক্রিয়াটিকে মডুলেশন বলা হয়। এই মডুলেটেড তরঙ্গ অ্যামপ্লিফায়ার দিয়ে বিবর্ধন করা হয় এবং অ্যান্টেনার সাহায্যে চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ বা রেডিও তরঙ্গ ভূমি তরঙ্গ হিসেবে কিংবা বায়ুমণ্ডলের আয়োনোস্ফিয়ারে প্রতিফলিত হয়ে বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। রেডিও বা গ্রাহক যন্ত্রের ভেতর যে অ্যান্টেনা থাকে সেটি এই রেডিও তরঙ্গকে বিদ্যুৎ তরঙ্গে রূপান্তর করে নেয়। এরপর প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিকস ব্যবহার করে বাহক তরঙ্গ থেকে আলাদা করে নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে ডিমডুলেশন বলা হয়। ডিমডুলেটেড বৈদ্যুতিক সিগন্যালটিকে অ্যামপ্লিফায়ার দিয়ে বিবর্ধন করে শোনার জন্য স্পিকারে পাঠানো হয়।
রেডিও তরঙ্গ হিসেবে পাঠানোর জন্য রেডিও সম্প্রচার স্টেশনগুলো আলাদা আলাদা কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে। গ্রাহক যন্ত্রও নির্দিষ্ট কোনো স্টেশন শুনতে হলে সেই কম্পাঙ্কের সিগন্যালে টিউন করে নেয় তাই আলাদা আলাদা রেডিও স্টেশন সবাই নিজের অনুষ্ঠান প্রচার করতে পারে এবং শ্রোতারা নিজের পছন্দের রেডিও স্টেশনের অনুষ্ঠান শুনতে পারে ।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে গ্রাহক তরঙ্গের বিচার বা Amplitude বাড়িয়ে বা কমিয়ে সিগন্যালটি সংযুক্ত করা হয় বলে এই পদ্ধতিটির নাম AM (Amplitude Modulation) রেডিও । যদি Amplitude সমান রেখে কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করে মডুলেট করা হতো তাহলে এই পদ্ধতিকে বলা হতো FM (Frequency Modulation) রেডিও।
আরও দেখুন...